তথ্য প্রযুক্তি কি? সুবিধা অসুবিধা এবং ক্ষেত্রসমূহ |

তথ্যপ্রযুক্তি কি তথ্য ও প্রযুক্তির সুবিধা অসুবিধা

তথ্য প্রযুক্তি কি বা কাকে বলে

 ধরনের প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন কাজের অগ্রগতি করতে পারি এবং সে কাজগুলোর তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে আধুনিকরণ করতে পারি এবং ব্যবস্থা  বিতরণ করতে পারিসে ধরনের প্রযুক্তি কি মূলত তথ্য  যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়।

তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহ

তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্র বিরাট। তথ্য প্রযুক্তির বিরাটি ক্ষেত্র সমূহ আলোচনা করলে অনেক দীর্ঘ সময় লেগে যাবে তাই আমরা সংক্ষিপ্ত পরিসরে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহ নিয়ে আলোচনা করব। তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে এর সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে আপনারা যে সকল বিষয়গুলো জানতে পারবেন তা আপনাদের সকলের জন্য উপকারে আসবে।

ব্যক্তিগত জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার

ব্যক্তিগত জীবনে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে অতপ্রতভাবে জড়িত রয়েছি। আমরা সকাল থেকে শুরু করে সারাদিন রাত অব্দি পুরোটা সময় তথ্য প্রযুক্তির মধ্যে ডুবে থাকি। হয়তো অনেকেই ভাবছেন কিভাবে আমরা সারাদিন রাত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করি। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সম্পর্কে।

ঘুম থেকে উঠে আমরা সময় দেখি এবং বিভিন্ন জনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। প্রথমত এগুলোই আমাদের তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শুরু হয়ে থাকে। আমরা দূরে কোথাও যাত্রা করবার জন্য অনলাইনে গাড়ি অর্ডার দিতে পারি এটাও তথ্য প্রযুক্তের মধ্যে পড়ে। আমরা ঘরে বসেই খুব সহজে যে কোন খাবার অর্ডার করে খেতে পারি।

ঘরে বসে শপিং করতে পারি, রান্নার রেসিপি শিখতে পারি, চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারি ইত্যাদি এগুলো সবকিছুই তথ্যপ্রযুক্তির মধ্যে পড়ে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারি। ঘরে বসে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদেশে এবং অন্যান্য সকল জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সঠিক রাখতে পারি আরো অনেক রকম ক্ষেত্রে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি। এগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারছি ব্যক্তিগত জীবনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার

বর্তমান সময়ে আমরা খুব সহজেই যে কোন প্রশ্নের উত্তর বিভিন্ন স্থানে তথ্য প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে পেয়ে থাকি। আমরা যেকোনো বই গাইড অথবা যে কোন ক্লাস খুব সহজে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে youtube, google অথবা অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম থেকে করে নিতে পারি। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর আমরা জানিনা সেগুলো জানার জন্য আমরা বিভিন্ন জনের সাহায্য নিতাম। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনলাইনের যুগে বা তথ্যপ্রযুক্তি যুগে নিজে নিজেই আমরা সকল কিছু করতে পারি।

বই পড়ার জন্য বিভিন্ন লাইব্রেরীতে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না বর্তমান সময়ে। আমরা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন লাইব্রেরীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বা বিভিন্ন অ্যাপস নামিয়ে সেই সকল বইগুলো খুব সহজে পড়ে নিতে পারি। শিক্ষার জন্য বিভিন্ন সময় আমাদের প্র্যাকটিক্যালি অনেক জিনিস দেখার প্রয়োজন হয়।

কিন্তু আমরা সেগুলো থেকে সঠিকভাবে জ্ঞান আহরণ করতে পারি না। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরা সেই সকল জিনিসগুলো তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সহজেই খুব সুন্দরভাবে দেখে নিতে পারি। পরবর্তী সময়ে দেখার জন্য ও সংরক্ষণ করে রাখতে পারব। শিক্ষা ক্ষেত্রে ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। তথ্য প্রযুক্তি আমাদের জীবনের প্রায় পুরোটাই জুড়ে রয়েছে সকল ক্ষেত্রে।


যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করা

ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির মাধ্যমে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাটা সবথেকে বেশি উন্নত হয়েছে। আমরা এখন ঘরে বসেই একজন আরেকজনের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করতে পারছি। খুব সহজেই দূর-দূরান্তের মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করতে পারছি। এছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার কারণে আমরা খুব সহজেই সকল প্রকার কাজ করতে পারছি। এতে করে আমাদের সময়ের অপচয় হচ্ছে না এবং সকল কাজ গুলো খুব দ্রুত সম্পন্ন করতে পারছে সঠিকভাবে।

বিশ্বায়ন

তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধুমাত্র দেশের মধ্যে যে উন্নতি হয়েছে তা কিন্তু নয় এর ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী এক বিপুল পরিমাণে উন্নতি এসেছে। পূর্বের দিনে এক দেশ থেকে অন্য দেশে অধিবাসন করতে হতো শুধুমাত্র ব্যবসায়িক  মিট আপ করার জন্য। কিন্তু বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে দেশের মধ্যে বসে থেকে এই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মিট করা সম্ভব হচ্ছে।

প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে খরচ কম হওয়া

তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার না করার আগ পর্যন্ত আমাদের একজন আরেকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হতো কিন্তু বর্তমানে ভিডিও কনফারেন্স অথবা অডিও কলের মাধ্যমে অল্প পরিমাণ টাকার মধ্য দিয়ে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি। এছাড়া বিভিন্ন -কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি বিরাট ভূমিকা পালন করছে।

নতুন চাকরির সম্ভাবনা

প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে আমরা নতুন নতুন আকর্ষণীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারছি এবং শিখতে পারছি। এতে করে আমরা খুব সহজেই নতুন নতুন সেক্টর গুলোতে কাজ করার সুযোগ পাবো। এবং নিজের স্কিলকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে পারব।


শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার

তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে শিক্ষা ক্ষেত্রে এসেছে এক প্রশস্ত পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে ঘরে বসে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে কমিউনিকেশন করতে পারছে। বিভিন্ন শিক্ষার্থীর মধ্যে স্কুলের নোট এবং  ক্লাস বিষয়ক নানা ধরনের তথ্য সরবরাহ করতে পারছে। প্রযুক্তির ব্যবহার কারণে অনেক বড় বড় জটিল সমস্যাগুলোর সমাধান খুব সহজে দ্রুত সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হচ্ছে।

গবেষণায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণা করে থাকি। গবেষণা করা পূর্বের তুলনায় বর্তমান সময়ে অনেক বেশি সহজ। পূর্বে গবেষণা করা কষ্টকর ছিল কিন্তু বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির কারণে তা অনেক সহজ হয়েছে। বর্তমান সময়ে যেকোন তথ্যকে সংগ্রহ করে রাখা অত্যন্ত সহজ কিন্তু পূর্বে তথ্য সংগ্রহ করা ও কঠিন ছিল। গবেষণার কাজের জন্য যে সকল তথ্যগুলো সংগ্রহ করবো তা সংরক্ষণ করা ও বর্তমান সময়ে অনেক সহজ।

বর্তমান সময়ে গবেষণা করার জন্য পূর্বের মতো অতটা পরিশ্রম করতে হয় না। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সহজেই গবেষণা প্রক্রিয়া উন্নত পর্যায়ে করা সম্ভব। বর্তমান সময়ে অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে গবেষণা প্রক্রিয়া আরো সহজ হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারছি কিভাবে কোন কাজটি করলে খুব দ্রুত সময়ে গবেষণা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারব।

তথ্য প্রযুক্তি কি? সুবিধা অসুবিধা এবং ক্ষেত্রসমূহ

বিনোদনের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার

আমরা সকলেই বিনোদন পছন্দ করে থাকি। আমরা অবশ্যই সময়গুলোতে এবং বিভিন্ন সময়গুলোতে বিনোদন উপভোগ করতে চাই। বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির কারণে আমরা যেকোনো সময় বিনোদন উপভোগ করতে পারি। আমরা স্মার্টফোন অথবা অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে বিনোদন পেতে পারি।

স্মার্টফোনের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে আমরা বেশিরভাগ সময় বিনোদন উপভোগ করে। তথ্য প্রযুক্তি না থাকলে আমরা অবসর সময় গুলো সহজে কাটাতে পারতাম না। বিনোদনের জন্য আমরা মুঠোফোনের মাধ্যমে খুব সহজেই ইউটিউব, গুগল, ফেসবুক ইত্যাদি মাধ্যমে বিনোদন এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারি।

আমাদের বিনোদন উপভোগ করার চাহিদা এক এক জনের একেক রকম। আমরা তথ্য প্রযুক্তির যুগে নিজের চাহিদা সম্পন্ন অনুযায়ী বিভিন্ন রকম ভিডিও দেখে থাকি। অনেকেই রয়েছে গেম খেলে, অনলাইনে চ্যাটিং করে, ভিডিও দেখে, গান শুনে, টেলিভিশন দেখে, মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ইত্যাদি ভাবে বিনোদন এর সঙ্গে যুক্ত থাকি। এ সকল তথ্য থেকে আমরা বুঝতে পারি যে বিনোদনের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য।

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের জীবনে ব্যাপক উন্নতি এবং পরিবর্তনের এনেছে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আমার আমাদের কাজগুলোকে আরো গতিশীল করতে পেরেছি, আমরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকি তার কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হল।
  • প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে অনেক কাজ এখন ঘরে বসে করা সম্ভব হচ্ছে
  • ডেটা ইস্তান্তরের গতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে
  • প্রতিটা সময়ে কাজের গতিগুলো ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে
  • খুব অল্প সময়ের মধ্যে অনেক বেশি তথ্য সরবরাহ করা যাচ্ছে ফলে খরচ অনেকটাই কম হচ্ছে
  • তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক উন্নতি হয়েছে
  • প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে ব্যবহারকারী এবং দ্রব্য উৎপাদনকারীদের মধ্যে একটি বিশেষ সমন্বয় ঘটেছে
  • শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে
  • মানুষের অতিরিক্ত শক্তের অপচয় করা লাগছে না
  • তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে দিন দিন মানুষের দক্ষতা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির অসুবিধা

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে আমরা নানা ধরনের  পেলেও আমাদের অজান্তে অনেক বেশি অসুবিধার দিকটাও আছে। যে দিকগুলো সম্পর্কে আমাদের জানাটা অত্যন্ত জরুরি। এবং এসকল বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে সামনের দিকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম গুলো ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে। আসুন দেখেন প্রযুক্তির অসুবিধা গুলো কি কিঃ-
  • তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে মানুষ ঘরে বসে সকল কাজ করছে ফলে একে অন্যের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় টা হারিয়ে যাচ্ছে।
  • প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে অনেক মানুষ শুধু প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে ফলে তাদের শরীর এবং রুচির বিরূপ প্রভাব দেখা দিচ্ছে।
  • প্রযুক্তি ব্যবহার একটি ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে অনেক সাধারণ মানুষ এসে সেবা থেকে বিরত হচ্ছে।
  • প্রযুক্তির অভাব ব্যবহারের কারণে মানুষের কর্ম পরিবেশ হারিয়ে যাচ্ছে


FAQ

আইসিটি এর পূর্ণরূপ কি?

উত্তরঃ- আইসিটি এর পূর্ণরূপ হল” information and communication Technology”  বাংলায় একে বলা হয় তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি।

আইসিটি এর জনক কে?

উত্তরঃ- ক্লাড শেনন নামের এক ব্যক্তি যিনি মার্কিন গণিতবিদ  ছিলেন।

বাংলাদেশের ইন্টারনেট চালু করা হয় কখন?

উত্তরঃ- ১৯৯৬ সালে

ইন্টারনেট জগতে প্রথম ডোমেইন এর নাম কি ছিল?

উত্তরঃ- (. com) ডট কম ডোমেইন

বিশ্বে কত সালে ইন্টারনেট চালু হয়

উত্তরঃ- ১৯৬৯

নবীনতর পূর্বতন