পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে

পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে

হ্যালো বন্ধুরা আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে একটি দেশ নিয়ে আলোচনা করব যে দেশটিতে প্রচুর পরিমাণে বাঙালি মানুষ অধিবাসন করে থাকে। তাই আপনাদের জন্য আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় হবে সেই দেশটিকে নিয়ে। অনেকেই হয়তোবা বুঝতে পারছেন আমরা কোন দেশটির কথা বলতে চাচ্ছি। হ্যাঁ বন্ধুরা সঠিক ধরেছেন আমরা আসলে পর্তুগাল দেশটির কথা বলছি।

পর্তুগাল দেশটিতে শুধুমাত্র কাজ নয়, কাজের পাশাপাশি টুরিস্ট এবং স্টুডেন্ট ভিসায় প্রচুর পরিমাণে বাঙালি নাগরিক প্রতিনিয়ত অধিবেশন করে থাকে। তাই পর্তুগাল দেশের ভিসা এবং যাবতীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের জানাটা অত্যন্ত জরুরী। তাই ঠিক আজকের এই আর্টিকেলটির মধ্যে আমরা পর্তুগাল কাজের ভিসা থেকে শুরু করে টুরিস্ট ভিসা পর্যন্ত যাবতীয় সকল তথ্য আলোচনা করার চেষ্টা করব। আপনি যদি পর্তুগাল অধিবাসন করতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক মূল্যবান।

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম ও অন্যান্য সকল তথ্য নিয়ে আজকের আর্টিকেল সাজানো হয়েছে। পুরো কন্টেন্ট মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনারা এই সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পর্তুগাল কাজের ভিসা

পর্তুগালে কাজের ভিসায় প্রচুর পরিমাণে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ মানুষ কাজের ভিসায় পর্তুগাল অধিবাসন করেছে। বর্তমানে পর্তুগালে প্রায়ই কয়েক হাজার মানুষ কাজের ভিসায় কর্মরত আছেন।

বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময় পড়তে গেলে কাজের ভিসার জন্য সার্কুলার প্রদান করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশে থাকা পর্তুগাল এম্বাসির থেকেও এ সকল সার্কুলার সম্পর্কে জানতে পারবেন। একটু সার্কুলার গুলো থেকে জেনে তারপরে আবেদন করে সহজেই পর্তুগাল কাজের ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।

পর্তুগাল কাজের বেতন

পর্তুগাল কাজের বর্তমান বেতন হলো ৯০০থেকে ১৫০০ ইউরো। তবে আপনি কোন ধরনের কাজ করছেন এবং আপনি উক্ত কাজের উপরে কতটা দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছেন সেটার উপরে আপনার বেতন নির্ধারণ করা হবে।

পর্তুগালে গিয়ে যারা সাধারণ কাজগুলো করে তারা ন্যূনতম ৯০০ থেকে ১০০০ ইউরো পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে। অপরদিকে যে সকল নাগরিকরা অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে এবং উচ্চ পদস্থ হয় তাদের ক্ষেত্রে ১২০০ থেকে ১৫০০ ইউরোপ পর্যন্ত বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী বিদেশে যাচ্ছে উচ্চ শিক্ষার আশায়। একইভাবে ইউরোপের এই দেশটিতেও প্রচুর পরিমাণে শিক্ষার্থী অধিবাসন করছে স্টুডেন্ট ভিসায়। তো গেলে যে সকল ইউনিভার্সিটি গুলো রয়েছে বাঙ্গালীদের জন্য বিশেষ বিশেষ কিছু সুবিধা প্রদান করে থাকে। তাই বাঙালি শিক্ষার্থীদের পড়তে গেলে কি লেখাপড়ার জন্য বিশেষ কিছু আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও পর্তুগালে যাওয়ার শিক্ষার্থীদের অন্যতম বড় সুবিধা হচ্ছে সেখানে গিয়ে তারা কাজ করতে পারেন। ইউরোপের অনেক দেশেই স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে কোন ধরনের কাজ করা যায় না কিন্তু পর্তুগালের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারেই ভিন্ন। ইউরোপের এই দেশটিতে এসে আপনি খুব সহজেই স্টুডেন্ট ভিসা নিয়েও কাজ করার সুবিধা পাবেন। তাই আপনি চাইলে লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়তি ইনকাম করতে পারবেন।

অনলাইনে পর্তুগাল ভিসা আবেদন

আপনি যদি পর্তুগাল ভিসা সংগ্রহ করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে একটি আবেদন করতে হবে। উক্ত আবেদনের ভিত্তিতেই পরবর্তীতে আপনার ভিসা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে।
পর্তুগাল ভিসার আবেদনের প্রক্রিয়াগুলো নিচে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলোঃ-
  • প্রথমেই আপনাকে একটি ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এখানে ক্লিক করে সরাসরি ওয়েবসাইটে যেতে পারবেন। অথবা নিচের লিংকে ক্লিক করেও ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারবেন।
  • https://pt.indeed.com/
  • ওয়েব সাইটে যাওয়ার পর আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটি কাজের নাম লিখে অনুসন্ধান করুন। এরপর সেখানে বেশ কিছু কাজের একটি তালিকা দেখতে পারবেন।
  • এরপর আপনার পছন্দের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কাজটির ভেতরে গিয়ে আপনার তথ্যবহুল সিভিটি সেখানে সাবমিট করতে হবে। মনে রাখবেন সিভিটি যেন অবশ্যই ইংরেজিতে হয়। ছবিটি সাবমিট করার পর দুই থেকে ১৪ কার্য দিবসের মধ্যে আপনাকে একটি মেইল করা হবে।
  • আপনি যদি উক্ত কাজের জন্য নির্বাচন হয়ে থাকেন তাহলে উক্ত মেইলের মাধ্যমে বিশেষ সংক্রান্ত সকল তথ্য প্রেরণ করা হবে।
  • পরবর্তীতে পর্তুগাল এম্বাসিতে সরাসরি যোগাযোগ করে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।


পর্তুগাল ভিসা  কি কি লাগে

প্রতিটা দেশে ভিসা পাওয়ার জন্য বেশ কিছু রিকোয়ারমেন্টস প্রয়োজন হয়। একইভাবে পর্তুগালের ক্ষেত্রেও বিষয়টির ব্যতিক্রম নয়। পর্তুগাল ভিসা পেতে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিতে হয়। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলোঃ-
  • সর্বনিম্ন এক বছর মেয়াদ সম্পূর্ণ একটি বৈধ পাসপোর্ট
  • পর্তুগাল ভিসা আবেদন ফরম
  • একটি সিভি
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ছবিটি অবশ্যই তিন মাসের অধিক পুরনো হওয়া যাবে না।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার একটি সনদপত্র
  • নাগরিক সনদপত্র
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সনদপত্র

পর্তুগাল ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়

পর্তুগাল ভিসা কিভাবে পাওয়া যায় সেটার আগে আপনাকে জানতে হবে পর্তুগালের কত ধরনের ভিসা রয়েছে। প্রতিটা ভিসা পাওয়ার ধরন আলাদা । তাই আপনি কোন ধরনের ভিসা নিতে চাচ্ছেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

পরবর্তীতে উক্ত ভিসার জন্য পর্তুগালের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে। সকল ডকুমেন্টস সহ আবেদন করার পর আপনাকে পরবর্তী মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে আপনার ভিসার সর্বশেষ আপডেট। যদি আপনি ভিসা পাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন তাহলে পর্তুগাল এম্বাসি থেকে খুব সহজে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন।

ঢাকা থেকে পর্তুগাল বিমান ভাড়া

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে অনেকগুলো ফ্লাইট প্রতিনিয়ত পরিচালিত হয়। বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল সর্বনিম্ন ভাড়া হলো ৯৭০০০ টাকা। তবে আপনি যদি মনে করেন বিজনেস ক্লাসে পড়তে গেল অধিবাসন করবেন সেটাও সম্ভব।

বিজনেস ক্লাসে ঢাকা থেকে পর্তুগাল যেতে হলে প্রায় এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। এক্ষেত্রে সময় অনেক কম হবে এবং এয়ারলাইন্স অনেক ভালো পাবেন।


বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালের দূরত্ব

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালের দূরত্ব হচ্ছে ৯৪৭ কিলোমিটার

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত সময় লাগে

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে সর্বনিম্ন ৫ ঘন্টা সময় লাগে । তবে এয়ারলাইন্স যদি অনুন্নত হয় বা কোন সমস্যা হয় তাহলে কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে।

পর্তুগাল এম্বাসি বাংলাদেশ

বাংলাদেশ থেকে যারা পর্তুগাল গেলে যেতে চান তাদের অনেকেই এজেন্সি খুঁজতে থাকেন । কিন্তু বাংলাদেশে কোন পর্তুগালের এজেন্সি নেই। বাংলাদেশ থেকে যদি পর্তুগালে এজেন্সির মাধ্যমে সরাসরি যেতে চান তাহলে ভারতীয় বস্তুত পর্তুগালে এসেছে সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

পর্তুগালে কোন কাজের চাহিদা বেশি

বাঙালিরা পর্তুগালে গিয়ে অনেক ধরনের কাজ করে থাকে তবে পর্তুগিজরা সাধারণত বাঙ্গালীদের কে যে কাজগুলো সব থেকে বেশি করায় তার একটি লিস্ট উল্লেখ করা হলোঃ-
  1. কনস্ট্রাকশন
  2. হোটেল
  3. রেস্টুরেন্ট
  4. বাগানবাড়ি
  5. ড্রাইভার
  6. কৃষি
  7. ক্লিনার
  8. ইলেকট্রিশিয়ান
  9. সেফ
  10. দোভাষী

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশ থেকে তিন ধরনের ভিসা নিয়ে পর্তুগাল যাওয়া যায়। তবে অনেকেই আছে যারা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়েও সেখানে গিয়ে ওয়ার্ক পারমিট বেশি কাজ করতে পারেন। আর যারা সরাসরি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যান তারা প্রথম থেকেই কাজে লাগতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালের টুরিস্ট ভিসাও পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল ভিসা পাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম অনলাইনে একটি আবেদন করতে হয়। উক্ত আবেদনে একটি তথ্যবহুল সিভি সাবমিট করতে হয় । সাবমিটকৃত সিভির পরিপ্রেক্ষিতে  পরবর্তীতে আপনাকে জানানো হয়। আপনার চাহিদাকৃত বিষয়টিতে যদি আপনি উপযুক্ত হয়ে থাকেন তাহলে খুব শীঘ্রই আপনাকে প্রদান করে পর্তুগাল সরকার।

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার আর একটা সহজ উপায় হল পর্তুগালে থাকা কোন পরিচিত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা। এক্ষেত্রে ভিসা পাওয়াটা সব থেকে বেশি সহজ হয়ে যায় এবং প্রচলিত হওয়ার ঝুঁকিটা একেবারেই কম থাকে।

পর্তুগাল ভিসা কত টাকা

পর্তুগাল ভিসা পেতে ৬ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। তবে আপনি কোন মাধ্যমে পর্তুগাল যেতে চান এবং কোন ধরনের ভিসা নিতে চান সেটার প্রকারভেদের ওপর টাকার পরিমাণ নির্ভর করবে।
ওয়ার্ক ভিসার তুলনায় স্টুডেন্ট ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসা খরচ অনেকটাই কম হয়।

আবার আপনি যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে পর্তুগাল ভিসা নিতে চান তাহলে আর থেকে ১০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এছাড়াও কোনো দালাল বা দ্বিতীয় কোন পক্ষের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করার চেষ্টা করলে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকিটাও বেশি থাকে আবার ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার নিয়ম


পর্তুগাল কৃষি ভিসা আবেদন

পর্তুগালে বাংলাদেশে যে শ্রমিক নেয়া হয় তাদের অধিকাংশই কৃষি ভিসায় যোগদান করে। এবং পর্তুগালে কৃষি ভিসায় অনেক বেশি পরিমাণে বেতন পাওয়া যায়। তাই বাংলাদেশ থেকে যদি পর্তুগালে যেতে চান তাহলে কৃষি ভিসায় আবেদন করে দেখতে পারেন।

পর্তুগাল কৃষি বিষয়ে আবেদন করার জন্য উপরে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাবমিট করে অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে পর্তুগাল কৃষি ভিসার জন্য নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। আপনি যদি পর্তুগাল কৃষি ভিসাই যেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। পর্তুগাল কৃষি ভিসায় সার্কুলার দেওয়ার সাথে সাথে আমরা আপনাদেরকে সঠিক তথ্য জানিয়ে দিব।

পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার উপায়

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা পাওয়া একটু জটিল, টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য একটু কষ্ট করার প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশে কোন পর্তুগাল এম্বাসি নেই। সরাসরি বাংলাদেশে এম্বাসি না থাকার কারণে টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জটিলতা দেখা যায়। তবে সকল রিকোয়ারমেন্ট যদি সঠিক থাকে তাহলে খুব কম সময়ের মধ্যেই পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা পাওয়া সম্ভব।

নবীনতর পূর্বতন